কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খুলবেন (সহজ গাইড ২০২৫)
বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং একটি অপরিহার্য সেবা হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত নামটি হলো ‘বিকাশ’। দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজন যেমন – টাকা পাঠানো, বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, কেনাকাটা, বেতন বা ভাতা গ্রহণ ইত্যাদি অনেক কাজই এখন বিকাশের মাধ্যমে সহজে ও দ্রুত করা যায়। আপনি যদি এখনও বিকাশ একাউন্ট না খুলে থাকেন বা কিভাবে খুলতে হয় সে বিষয়ে জানতে চান, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এখানে আমরা ২০২৫ সালের সর্বশেষ নিয়ম অনুযায়ী ছবিসহ ধাপে ধাপে বিকাশ একাউন্ট খুলবেন কিভাবে, তা বিস্তারিত আলোচনা করব।

ভূমিকা: বিকাশ একাউন্টের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিকাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি শুধু শহরেই নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও আর্থিক লেনদেনকে করেছে সহজ ও নিরাপদ। একজন দিনমজুর থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গৃহিণী – সকলেই বিকাশের সুবিধা ভোগ করছেন।
বিকাশ একাউন্ট থাকলে আপনি যেসকল সুবিধা পাবেন:
- সেন্ড মানি: দেশের যেকোনো প্রান্তে যেকোনো বিকাশ একাউন্টে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠাতে পারবেন।
- ক্যাশ আউট: নিকটস্থ যেকোনো বিকাশ এজেন্ট বা ATM থেকে টাকা তুলতে পারবেন।
- মোবাইল রিচার্জ: নিজের বা অন্যের মোবাইলে রিচার্জ করতে পারবেন।
- পেমেন্ট: দোকানপাট, অনলাইন শপ, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন মার্চেন্ট পয়েন্টে বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
- বিল পে: বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট, ক্রেডিট কার্ড, স্কুল-কলেজের ফিসহ বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
- রেমিটেন্স গ্রহণ: বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা সহজে গ্রহণ করতে পারবেন।
- সঞ্চয় ও ঋণ: বিকাশের মাধ্যমে সঞ্চয় স্কিম এবং ক্ষুদ্র ঋণ সুবিধাও পাওয়া যায়।
এই সকল সুবিধার কারণে, একটি bKash account create করা এখন সময়ের দাবি।
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে
একটি নতুন বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আপনার কিছু মৌলিক তথ্য ও উপকরণ প্রয়োজন হবে। নিচে তার একটি তালিকা দেওয়া হলো:
- একটি সচল মোবাইল নম্বর: যে নম্বরে আপনি বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান। এটি যেকোনো অপারেটরের (গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, এয়ারটেল, টেলিটক) হতে পারে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): আপনার আসল জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড অথবা পুরনো লেমিনেটেড এনআইডি কার্ড)।
- আবেদনকারীর ছবি: একাউন্ট খোলার সময় আপনার একটি ছবি তোলা হবে (অ্যাপের মাধ্যমে খুললে সেলফি, এজেন্টের কাছে গেলে তারা তুলে নেবেন)।
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট (প্রয়োজনে): অনেক ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হতে পারে, বিশেষ করে এজেন্টের মাধ্যমে খুললে।
- একটি স্মার্টফোন (অ্যাপের মাধ্যমে খুললে): যদি আপনি বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে নিজে নিজে একাউন্ট খুলতে চান।
এইগুলো প্রস্তুত থাকলে, আপনি সহজেই বিকাশ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।
ধাপে ধাপে বিকাশ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি (এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে)
যদি আপনার কাছে স্মার্টফোন না থাকে অথবা আপনি অ্যাপ ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, তাহলে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সহজেই একাউন্ট খুলতে পারেন।
ধাপ ১: মোবাইল নম্বর প্রস্তুত রাখা
আপনি যে মোবাইল নম্বরে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান, সেই মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ডটি সাথে রাখুন। একাউন্ট খোলার সময় এই নম্বরে একটিভেশন কোড বা OTP আসবে।
ধাপ ২: নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ারে যান
আপনার এলাকার যেকোনো অনুমোদিত বিকাশ এজেন্ট, কাস্টমার কেয়ার বা কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টে যান। তাদের কাছে `bKash Registration` করার সুবিধা থাকে।

ধাপ ৩: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রদান করুন
এজেন্ট বা কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি দেখান। তিনি আপনার NID নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য তাদের সিস্টেমে এন্ট্রি করবেন। প্রয়োজনে তারা NID কার্ডের একটি ছবিও তুলে রাখতে পারেন।
ধাপ ৪: আপনার ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান
এজেন্ট একটি বিশেষ ডিভাইসের (সাধারণত একটি ট্যাব বা স্মার্টফোন) মাধ্যমে আপনার একটি লাইভ ছবি তুলবেন। এরপর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) নেওয়া হবে। এটি নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেসের সাথে আপনার তথ্য যাচাই করতে সাহায্য করে।
ধাপ ৫: একাউন্ট একটিভেশন ও প্রাথমিক তথ্য প্রদান
আপনার তথ্য সফলভাবে যাচাই হওয়ার পর, এজেন্ট আপনার নামে একটি নতুন বিকাশ একাউন্টের জন্য আবেদন করবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কনফার্মেশন SMS আসতে পারে অথবা এজেন্ট আপনাকে জানাবেন যে প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে, তারা আপনার পেশা, আয়ের উৎস ইত্যাদি সাধারণ কিছু তথ্য জিজ্ঞেস করতে পারেন।
সাধারণত একাউন্ট খোলার ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে একটিভেশন সম্পন্ন হয়। তবে অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবেও একাউন্ট একটিভ হয়ে যায়।
ধাপ ৬: বিকাশ পিন (PIN) সেট করা
একাউন্ট একটিভ হওয়ার পর, আপনাকে একটি প্রাথমিক পিন সেট করতে হবে। এই পিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপনীয়।
- আপনার মোবাইল থেকে *247# ডায়াল করুন।
- “Activate Mobile Menu” অপশনটি নির্বাচন করুন (সাধারণত 1 প্রেস করে)।
- আপনাকে একটি ৫ সংখ্যার নতুন পিন সেট করতে বলা হবে। এমন একটি পিন দিন যা সহজে অনুমান করা যায় না কিন্তু আপনি মনে রাখতে পারবেন।
- একই পিন পুনরায় দিয়ে কনফার্ম করুন।
গুরুত্বপূর্ণ: আপনার বিকাশ পিন নম্বর অত্যন্ত গোপনীয়। এটি কারো সাথে শেয়ার করবেন না, এমনকি বিকাশ প্রতিনিধি পরিচয় দিলেও না।
সফলভাবে পিন সেট করার পর আপনার বিকাশ একাউন্ট সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে!
bKash App দিয়ে নিজে নিজে একাউন্ট খোলার পদ্ধতি (স্টেপ-বাই-স্টেপ)
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজ পদ্ধতি হলো বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই একাউন্ট খোলা। এর জন্য আপনার একটি স্মার্টফোন, ইন্টারনেট সংযোগ এবং NID কার্ড থাকলেই চলবে।
ধাপ ১: বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করুন
আপনার স্মার্টফোনে Google Play Store (Android ব্যবহারকারীদের জন্য) অথবা Apple App Store (iPhone ব্যবহারকারীদের জন্য) থেকে অফিসিয়াল bKash অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইনস্টল করুন।

ধাপ ২: অ্যাপ ওপেন করে রেজিস্ট্রেশন শুরু করুন
অ্যাপ ইনস্টল করার পর ওপেন করুন। ভাষা নির্বাচন করার অপশন আসতে পারে (বাংলা/English)। এরপর “লগইন/রেজিস্ট্রেশন” বা “নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলুন” অপশনে ট্যাপ করুন।
ধাপ ৩: মোবাইল নম্বর ও অপারেটর নির্বাচন
আপনি যে মোবাইল নম্বরে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান, সেই নম্বরটি প্রবেশ করান। এরপর আপনার সিম অপারেটর (যেমন: Grameenphone, Robi, Banglalink, Airtel, Teletalk) স্বয়ংক্রিয়ভাবে সনাক্ত হতে পারে অথবা আপনাকে তালিকা থেকে নির্বাচন করতে হতে পারে। “পরবর্তী” বা “Next” বাটনে ট্যাপ করুন।
ধাপ ৪: OTP ভেরিফিকেশন
আপনার দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি OTP (One Time Password) পাঠানো হবে। অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে OTP সনাক্ত করতে পারে অথবা আপনাকে SMS থেকে দেখে OTP টি নির্দিষ্ট ঘরে বসাতে হবে। “কনফার্ম” বা “Verify” বাটনে ট্যাপ করুন।
ধাপ ৫: শর্তাবলীতে সম্মতি প্রদান
বিকাশের শর্তাবলী দেখানো হবে। ভালোভাবে পড়ে “আমি সম্মত” বা “I Agree” অপশনে ট্যাপ করুন।
ধাপ ৬: জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) ছবি তুলুন
এখন আপনাকে আপনার NID কার্ডের ছবি তুলতে বলা হবে।
- প্রথমে NID কার্ডের সামনের দিকের (Front Part) واضح ছবি তুলুন। খেয়াল রাখবেন ছবিটি যেন ঝাপসা না হয় এবং সব লেখা পড়া যায়।
- এরপর NID কার্ডের পেছনের দিকের (Back Part) ছবি তুলুন।
অ্যাপে দেখানো নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। ছবি তোলা শেষে “সাবমিট” বা “Submit” করুন।

ধাপ ৭: NID তথ্য যাচাই ও নিশ্চিতকরণ
অ্যাপ আপনার NID থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য (যেমন নাম, পিতার নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি) সংগ্রহ করে দেখাবে। তথ্যগুলো আপনার NID কার্ডের সাথে মিলিয়ে দেখুন। সব ঠিক থাকলে “পরবর্তী” বা “Next” বাটনে ট্যাপ করুন।
ধাপ ৮: অতিরিক্ত তথ্য প্রদান
আপনাকে কিছু অতিরিক্ত তথ্য যেমন – আপনার লিঙ্গ (Gender), আয়ের উৎস (Source of Fund), আনুমানিক মাসিক আয় (Estimated Monthly Income), পেশা (Occupation) ইত্যাদি নির্বাচন করতে বলা হবে। সঠিক তথ্য প্রদান করে “পরবর্তী” ধাপে যান।
ধাপ ৯: নিজের চেহারার ছবি (সেলফি) তুলুন
এখন আপনাকে একটি সেলফি তুলতে হবে। অ্যাপের ক্যামেরার মাধ্যমে আপনার মুখের একটি পরিষ্কার ছবি তুলুন। ছবি তোলার সময় পর্যাপ্ত আলো আছে কিনা এবং আপনার মুখ যেন ক্যামেরার ফ্রেমে ঠিকভাবে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। কয়েকবার চোখের পলক ফেলতে বলা হতে পারে। ছবি তোলা হলে “কনফার্ম” করুন।

ধাপ ১০: কনফার্মেশন ও পিন সেটআপ
সকল তথ্য ও ছবি সফলভাবে সাবমিট করার পর, আপনার আবেদনটি পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হবে। সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই (কখনও ২৪-৪৮ ঘণ্টা লাগতে পারে) আপনার মোবাইলে একটি কনফার্মেশন SMS আসবে যে আপনার বিকাশ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সফল হয়েছে।
একাউন্ট একটিভ হওয়ার SMS পাওয়ার পর, আপনাকে অ্যাপের মাধ্যমেই অথবা *247# ডায়াল করে একটি ৫ সংখ্যার নতুন পিন সেট করতে হবে (আগের এজেন্ট পদ্ধতির মতোই)।
- অ্যাপে লগইন করার চেষ্টা করলে পিন সেট করার অপশন পাবেন।
- অথবা *247# ডায়াল করে মেনু থেকে নতুন পিন সেট করুন।
পিন সেট করা হয়ে গেলেই আপনার bKash registration সম্পন্ন এবং একাউন্ট ব্যবহারের জন্য তৈরি!
বিশেষ অফার: নতুন বিকাশ একাউন্ট খুললে প্রায়শই বিভিন্ন বোনাস বা ক্যাশব্যাক অফার থাকে। অ্যাপে বা বিকাশের ওয়েবসাইটে এই অফারগুলো দেখে নিতে পারেন।
বিকাশ একাউন্ট ব্যবহারে সতর্কতা ও পরামর্শ
বিকাশ একাউন্ট আপনার আর্থিক লেনদেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই এর নিরাপত্তাও অত্যন্ত জরুরি।
- পিন গোপন রাখুন: আপনার বিকাশ পিন নম্বর (PIN) এবং একাউন্টের ব্যালেন্স সম্পূর্ণ গোপন রাখুন। এটি কারো সাথে (এমনকি বিকাশ কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি পরিচয় দিলেও) শেয়ার করবেন না। বিকাশ কর্মীরা কখনোই আপনার পিন জানতে চাইবেন না।
- OTP শেয়ার করবেন না: কোনো লেনদেন বা ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার মোবাইলে আসা OTP (One Time Password) কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
- অপরিচিত নম্বর থেকে আসা প্রলোভন: লটারি জেতা, পুরষ্কার পাওয়া বা বিভিন্ন অফারের নামে পাঠানো SMS বা ফোন কল থেকে সাবধান থাকুন। এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা দেবেন না।
- নিরাপদ স্থানে লগইন: পাবলিক কম্পিউটার বা অনিরাপদ Wi-Fi নেটওয়ার্কে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- অ্যাপ আপডেট রাখুন: সর্বদা বিকাশ অ্যাপের সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করুন।
- ফোন হারিয়ে গেলে: আপনার মোবাইল ফোন বা সিম কার্ড হারিয়ে গেলে দ্রুত বিকাশ হেল্পলাইন (16247) এ কল করে আপনার একাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করার অনুরোধ জানান।
- সন্দেহজনক লেনদেন: কোনো সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যকলাপ দেখলে সাথে সাথে বিকাশ কর্তৃপক্ষকে জানান।
- এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ আউট: টাকা তোলার সময় এজেন্টের রেজিস্টার খাতায় লেখা টাকার পরিমাণ এবং আপনার মোবাইলে আসা SMS-এর সাথে টাকার পরিমাণ মিলিয়ে নিন।
এক নজরে বিকাশ একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া
- পদ্ধতি ১ (এজেন্ট/কাস্টমার কেয়ার):
- সচল মোবাইল ও NID কার্ড নিয়ে এজেন্ট পয়েন্টে যান।
- NID তথ্য ও ছবি প্রদান করুন (ফিঙ্গারপ্রিন্ট লাগতে পারে)।
- একাউন্ট একটিভেশনের জন্য অপেক্ষা করুন।
- *247# ডায়াল করে পিন সেট করুন।
- পদ্ধতি ২ (বিকাশ অ্যাপ):
- বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করুন।
- মোবাইল নম্বর ও OTP দিয়ে ভেরিফাই করুন।
- NID কার্ডের ছবি ও নিজের সেলফি তুলুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন।
- কনফার্মেশন পাওয়ার পর অ্যাপে বা *247# ডায়াল করে পিন সেট করুন।
যেকোনো পদ্ধতিতেই মোবাইল ব্যাংকিং বাংলাদেশ এর এই সেরা সেবাটি আপনি পেতে পারেন!
সাধারণ জিজ্ঞাসাসমূহ (FAQ Section)
প্রশ্ন ১: বিকাশ একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?
উত্তর: বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্পূর্ণ ফ্রি। এর জন্য কোনো চার্জ দিতে হয় না।
প্রশ্ন ২: OTP (One Time Password) না আসলে কী করবো?
উত্তর: প্রথমে আপনার মোবাইলের নেটওয়ার্ক কানেকশন চেক করুন। “Do Not Disturb” সার্ভিস চালু আছে কিনা দেখুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, অনেক সময় সার্ভারের ব্যস্ততার কারণে OTP আসতে দেরি হতে পারে। এরপরও না আসলে “Resend OTP” বা “পুনরায় OTP পাঠান” অপশনে ক্লিক করুন। নিশ্চিত করুন যে আপনি সঠিক মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
প্রশ্ন ৩: আমার মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে বা সিম নষ্ট হয়ে গেলে বিকাশ একাউন্টের কী হবে?
উত্তর: মোবাইল ফোন বা সিম হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে দ্রুত বিকাশ হেল্পলাইন 16247 এ কল করে আপনার একাউন্টটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিন। এরপর, একই নম্বরের নতুন সিম তুলে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমন NID, সিম রেজিস্ট্রেশনের প্রমাণ) সহ নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করলে তারা আপনার একাউন্টটি পুনরায় চালু করতে সাহায্য করবে। আপনার টাকা সুরক্ষিত থাকবে।
প্রশ্ন ৪: একটি NID কার্ড দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়?
উত্তর: বর্তমানে, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ব্যবহার করে একটি মাত্র বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী করা হয়।
প্রশ্ন ৫: বিকাশ একাউন্টের পিন ভুলে গেলে করণীয় কী?
উত্তর: আপনি যদি পিন ভুলে যান, তাহলে *247# ডায়াল করে পিন রিসেট করার অপশন পাবেন। সেখানে আপনার NID নম্বর এবং জন্ম তারিখের মতো কিছু তথ্য ভেরিফিকেশনের জন্য চাওয়া হতে পারে। সফল ভেরিফিকেশনের পর আপনি নতুন পিন সেট করতে পারবেন। এছাড়া বিকাশ অ্যাপ থেকেও পিন রিসেটের অপশন থাকতে পারে।
উপসংহার
আশা করি, এই বিস্তারিত গাইডটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই নিজের বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। বিকাশ আপনার দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনকে আরও সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করবে। মনে রাখবেন, অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্বদা সতর্ক থাকা এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। ২০২৫ সাল এবং তার পরেও বিকাশ আমাদের জীবনে আরও নতুন নতুন সুবিধা নিয়ে আসবে, তাই এখনই একটি একাউন্ট খুলে ডিজিটাল আর্থিক সেবার জগতে প্রবেশ করুন।
যদি এই আর্টিকেলটি আপনার উপকারে এসে থাকে, তবে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।