কিভাবে এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করবেন | NID Card Apply Online (সম্পূর্ণ নির্দেশিকা)
ভূমিকা: এনআইডি কার্ড কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
বাংলাদেশের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি (NID) কার্ড একটি অপরিহার্য ডকুমেন্ট। এটি কেবল আপনার পরিচয়ের প্রমাণই নয়, বরং ব্যাংক হিসাব খোলা, চাকরির আবেদন, পাসপোর্ট তৈরি, জমি রেজিস্ট্রেশন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সেবা গ্রহণ, এবং নির্বাচনে ভোটদানসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে এর প্রয়োজন হয়। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য এনআইডি কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব কিভাবে আপনি নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কী কী, এবং আবেদন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
এনআইডি কার্ড আবেদন: বিস্তারিত তথ্য ও প্রক্রিয়া
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (Election Commission Bangladesh) এনআইডি কার্ড প্রদান এবং সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে। নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া এখন অনেকাংশেই অনলাইন-ভিত্তিক, যা নাগরিকদের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করেছে।
ক. কারা নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন?
নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার যোগ্য:
- যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক যার বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি এবং পূর্বে কখনো এনআইডি কার্ডের জন্য নিবন্ধন করেননি।
- যাদের বয়স ১৮ বছরের কম কিন্তু ১৬ বা ১৭ বছর, তারাও নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেন, তবে তারা কার্ড পাবেন ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর। (এই নিয়ম পরিবর্তিত হতে পারে, সর্বশেষ তথ্যের জন্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট দেখুন)।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: একাধিকবার এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করা বা তথ্য গোপন করে আবেদন করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। যদি আপনার ইতোমধ্যে এনআইডি কার্ড থেকে থাকে এবং সেটি হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, তবে নতুন আবেদনের পরিবর্তে আপনাকে ডুপ্লিকেট বা সংশোধিত কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।
খ. অনলাইনে নতুন এনআইডি কার্ডের আবেদনের জন্য পূর্বপ্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করার আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতের কাছে রাখা জরুরি। এতে আবেদন প্রক্রিয়াটি মসৃণভাবে সম্পন্ন করা যাবে।
- জন্ম নিবন্ধন সনদ: আবেদনকারীর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (১৭ ডিজিটের)। এটি বাধ্যতামূলক।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি থাকে): এসএসসি (SSC) বা সমমানের সনদপত্র। এটি বয়স এবং নামের সঠিকতা প্রমাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি-এর কম, তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নাও হতে পারে, তবে থাকলে দাখিল করা উত্তম।
- পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/টিন সার্টিফিকেট (যদি থাকে): অতিরিক্ত পরিচয় প্রমাণ হিসেবে এগুলো দাখিল করা যেতে পারে।
- নাগরিকত্ব সনদ: ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/পৌরসভার মেয়র/ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদ।
- ঠিকানার প্রমাণপত্র:
- বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির বিলের সাম্প্রতিক কপি অথবা বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র।
- স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে জমির দলিলের কপি বা হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ (যদি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হয়)।
- পিতা-মাতার এনআইডি/জন্ম নিবন্ধন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে): পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি। যদি মৃত হন, তবে মৃত্যু সনদের কপি।
- স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে): বিবাহিত আবেদনকারীদের জন্য স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের ফটোকপি এবং বিবাহের কাবিননামা/সার্টিফিকেট।
- রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট (যদি থাকে): এটি ঐচ্ছিক, তবে থাকলে প্রদান করা ভালো।
- একটি সচল মোবাইল নম্বর: আবেদন প্রক্রিয়ার সময় ওটিপি (OTP) ভেরিফিকেশন এবং পরবর্তী যোগাযোগের জন্য।
- একটি ইমেইল আইডি (ঐচ্ছিক কিন্তু প্রস্তাবিত): যোগাযোগের জন্য।
গ. নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন পদ্ধতি (ধাপে ধাপে নির্দেশিকা)
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের NID Application System (services.nidw.gov.bd) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়। প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ: প্রথমে আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোন থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজার ওপেন করে services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিংকে যান।
- “আবেদন করুন” অপশন: ওয়েবসাইটের হোমপেজে “নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন” বা সমতুল্য অপশনে ক্লিক করুন।
- ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ:
- আপনার নাম (বাংলা ও ইংরেজিতে), জন্ম তারিখ (আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী), এবং মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে লিখুন।
- একটি ক্যাপচা কোড দেখতে পাবেন, সেটি সঠিকভাবে পাশের বক্সে লিখুন।
- “বহাল” বা “Submit” বাটনে ক্লিক করুন।
- মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন: আপনার দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি (OTP) বা ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে। সেই কোডটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওয়েবসাইটের নির্ধারিত স্থানে বসিয়ে “বহাল” বা “Verify” করুন।
- ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড তৈরি: একটি ইউজারনেম (যা পরবর্তীতে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করার জন্য ব্যবহৃত হবে) এবং একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করুন। পাসওয়ার্ডটি মনে রাখুন বা নিরাপদে সংরক্ষণ করুন।
- অ্যাকাউন্টে লগইন: সফলভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি হওয়ার পর, আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সিস্টেমে লগইন করুন।
- বিস্তারিত আবেদন ফরম পূরণ: লগইন করার পর আপনাকে একটি বিস্তারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পিতা-মাতার তথ্য, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। ফরমটি কয়েকটি ধাপে বিভক্ত থাকতে পারে। প্রতিটি ধাপ মনোযোগ সহকারে পূরণ করুন।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড (যদি প্রযোজ্য হয়): কিছু ক্ষেত্রে, আপনাকে কিছু প্রমাণপত্রের স্ক্যান কপি (যেমন: জন্ম নিবন্ধন সনদ, এসএসসি সনদ) আপলোড করতে বলা হতে পারে। সেক্ষেত্রে, নির্দেশিত ফরম্যাট (সাধারণত JPG, PNG, বা PDF) এবং সাইজ অনুযায়ী ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
- আবেদন সাবমিট: সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যদি চাওয়া হয়) আপলোড করার পর, আবেদনটি চূড়ান্তভাবে সাবমিট করুন।
- আবেদনপত্রের কপি ডাউনলোড ও প্রিন্ট: সফলভাবে আবেদন সাবমিট করার পর, আপনাকে আবেদনপত্রের একটি পিডিএফ কপি ডাউনলোড করার অপশন দেওয়া হবে। এই কপিটি অবশ্যই ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন। এই প্রিন্ট কপিতে একটি ফরম নম্বর বা ট্র্যাকিং নম্বর থাকবে, যা পরবর্তীতে কাজে লাগবে।
- সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ ও বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান: অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করার পর, প্রিন্টকৃত আবেদনপত্র এবং উপরে উল্লেখিত সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মূল কপি ও একসেট সত্যায়িত ফটোকপিসহ আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে আপনার ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) এবং চোখের আইরিশ স্ক্যান করা হবে।
গুরুত্বপূর্ণ ধাপ: অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করার পর নির্বাচন অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি, আঙুলের ছাপ) প্রদান করা বাধ্যতামূলক। এটি ছাড়া আপনার এনআইডি কার্ড প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না। কখন এবং কোথায় বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে, সে বিষয়ে আপনাকে মোবাইল SMS বা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে জানানো হতে পারে অথবা আপনাকে সরাসরি অফিসে খোঁজ নিতে হবে।
উদাহরণ: একজন নতুন ভোটারের এনআইডি আবেদন
ধরুন, জনাবা সাদিয়া ইসলাম সম্প্রতি ১৮ বছর পূর্ণ করেছেন এবং তিনি নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে চান।
- সাদিয়া প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন।
- তিনি তার জন্ম নিবন্ধন সনদ, এসএসসি সনদ, নাগরিকত্ব সনদ এবং বাসার বিদ্যুৎ বিলের কপি সংগ্রহ করেন।
- অনলাইন আবেদন ফরমে তিনি তার সকল ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা এবং পিতা-মাতার তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করেন।
- আবেদন সাবমিট করার পর তিনি আবেদনপত্রের একটি প্রিন্ট কপি নেন।
- পরবর্তীতে, তিনি তার এলাকার উপজেলা নির্বাচন অফিসে প্রিন্ট কপি এবং সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মূল ও ফটোকপিসহ উপস্থিত হন। সেখানে তার ছবি তোলা হয় এবং আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়।
- কিছুদিন পর, একটি SMS এর মাধ্যমে তাকে জানানো হয় যে তার এনআইডি কার্ড প্রস্তুত এবং তিনি নির্দিষ্ট দিনে অফিস থেকে সেটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
এই উদাহরণটি একটি সাধারণ নতুন এনআইডি আবেদন প্রক্রিয়ার চিত্র তুলে ধরে।
ভিডিও টিউটোরিয়াল: নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন
(উপরের ভিডিওটি একটি ডেমো। এই অংশে নতুন এনআইডি কার্ডের অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত একটি বাস্তব এবং শিক্ষামূলক ভিডিও টিউটোরিয়াল যুক্ত করুন।)
টিপস ও পরামর্শ: এনআইডি আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করতে
- সঠিক তথ্য প্রদান: আবেদন ফরমে আপনার সকল তথ্য (নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম ইত্যাদি) আপনার শিক্ষাগত সনদ, জন্ম নিবন্ধন এবং অন্যান্য প্রমাণপত্রের সাথে মিল রেখে নির্ভুলভাবে প্রদান করুন।
- স্পষ্ট কাগজপত্র: আপনি যে সকল কাগজপত্র জমা দেবেন বা আপলোড করবেন, সেগুলো যেন স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য হয়। সত্যায়িত কপির ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত করান।
- ফরম পূরণে সতর্কতা: অনলাইন ফরম পূরণের সময় তাড়াহুড়ো করবেন না। প্রতিটি তথ্য দেওয়ার পর পুনরায় যাচাই করে নিন।
- সচল মোবাইল নম্বর: যে মোবাইল নম্বরটি আবেদনে ব্যবহার করছেন, সেটি যেন আপনার নিজের বা পরিবারের কারো হয় এবং সর্বদা সচল থাকে। কারণ, নির্বাচন অফিস থেকে বিভিন্ন তথ্য ও নোটিফিকেশন এই নম্বরেই পাঠানো হবে।
- আবেদনপত্রের কপি সংরক্ষণ: অনলাইন আবেদন সাবমিট করার পর প্রাপ্ত আবেদনপত্রের কপি (ফরম নম্বরসহ) এবং বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের সময় প্রাপ্ত স্লিপটি সযত্নে সংরক্ষণ করুন। এনআইডি কার্ড হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এটি আপনার আবেদনের প্রমাণ।
- অফিসের সময়সূচী: উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে যাওয়ার আগে তাদের অফিসিয়াল সময়সূচী জেনে নিন।
- দালাল পরিহার: এনআইডি কার্ড একটি সরকারি সেবা। কোনো দালাল বা তৃতীয় পক্ষের দ্বারা প্ররোচিত না হয়ে নিজেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন অথবা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের সহায়তা নিন।
এনআইডি সেবা: ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও আধুনিকায়ন
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এনআইডি সেবাকে আরও নাগরিকবান্ধব ও আধুনিক করার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা এই ক্ষেত্রে আরও কিছু উন্নতি দেখতে পারি:
- সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়া (বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানসহ) আরও বিকেন্দ্রীভূত এবং সহজলভ্য হতে পারে, যেমন – ইউনিয়ন পর্যায়ে বা ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে।
- স্মার্ট এনআইডি কার্ডের আরও উন্নত সংস্করণ এবং এর সাথে বিভিন্ন নাগরিক সেবার ইন্টিগ্রেশন।
- অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে এনআইডি সম্পর্কিত আরও বেশি সেবা (যেমন: ঠিকানা পরিবর্তন, ছবি পরিবর্তন) ঘরে বসেই পাওয়ার সুযোগ।
- মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক এনআইডি সেবা, যা আবেদন, স্ট্যাটাস চেক এবং অন্যান্য কাজ আরও সহজ করে তুলবে।
এই ধরনের আধুনিকায়ন নাগরিকদের জন্য এনআইডি সম্পর্কিত সেবা গ্রহণকে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ এবং ঝামেলামুক্ত করবে।
উপসংহার: সঠিক প্রক্রিয়ায় এনআইডি কার্ড প্রাপ্তি নিশ্চিত করুন
জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড বাংলাদেশের প্রতিটি যোগ্য নাগরিকের জন্য একটি অপরিহার্য পরিচয় দলিল। নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ ও আধুনিক হয়েছে, বিশেষ করে অনলাইন ব্যবস্থার কারণে। সঠিক তথ্য, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি সহজেই নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই আর্টিকেলে প্রদত্ত নির্দেশিকা ও পরামর্শগুলো আপনার আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও মসৃণ করতে সহায়ক হবে বলে আশা করি। আপনার নাগরিক অধিকার প্রয়োগ এবং বিভিন্ন সেবা গ্রহণের জন্য দ্রুততম সময়ে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করুন।
FAQ (এনআইডি আবেদন সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা)
প্রশ্ন ১: নতুন এনআইডি কার্ড পেতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তর: অনলাইন আবেদন এবং বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের পর এনআইডি কার্ড প্রস্তুত হতে সাধারণত ৩০ থেকে ৯০ দিন সময় লাগতে পারে। তবে, এই সময়কাল নির্বাচন অফিসের কাজের চাপ এবং অন্যান্য পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। আপনি আপনার আবেদনপত্রের স্লিপ নম্বর দিয়ে অনলাইন পোর্টাল বা SMS এর মাধ্যমে স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন।
প্রশ্ন ২: এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে কি কোনো ফি লাগে?
উত্তর: নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য প্রথমবার আবেদন করতে সাধারণত কোনো ফি লাগে না। তবে, যদি আপনি নির্ধারিত সময়ের পরে (যেমন, বিশেষ নিবন্ধন প্রকল্পের সময়সীমার পর) আবেদন করেন বা ডুপ্লিকেট/সংশোধিত কার্ডের জন্য আবেদন করেন, সেক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত হারে ফি প্রযোজ্য হতে পারে।
প্রশ্ন ৩: আমার জন্ম নিবন্ধন সনদ নেই, আমি কি এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবো?
উত্তর: না, নতুন এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে আপনার অবশ্যই অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (১৭ ডিজিটের) থাকতে হবে। এটি একটি বাধ্যতামূলক ডকুমেন্ট।
প্রশ্ন ৪: আমি অনলাইনে আবেদন করতে পারছি না, সরাসরি অফিসে গিয়ে কি আবেদন করা যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, কিছু ক্ষেত্রে বা বিশেষ পরিস্থিতিতে (যেমন, ইন্টারনেট সুবিধা இல்லாத প্রত্যন্ত অঞ্চলে) সরাসরি উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে গিয়েও আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে। তবে, অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়াটিই বর্তমানে প্রধান এবং উৎসাহিত পদ্ধতি। বিস্তারিত জানতে আপনার স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন।
প্রশ্ন ৫: এনআইডি কার্ডের আবেদনে ভুল তথ্য দিলে কী হবে?
উত্তর: এনআইডি কার্ডের আবেদনে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। যদি অসাবধানতাবশত কোনো ভুল হয়ে যায় এবং সেটি কার্ড প্রস্তুত হওয়ার আগে ধরা পড়ে, তবে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে তা সংশোধনের সুযোগ থাকতে পারে। কার্ড পাওয়ার পর ভুল ধরা পড়লে, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক ও রিসোর্স (এনআইডি আবেদন)
-
এনআইডি অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম
services.nidw.gov.bd/nid-pub/ -
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন
www.ecs.gov.bd -
এনআইডি সম্পর্কিত তথ্য ও জিজ্ঞাসা
আপনার নিকটস্থ উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
-
এনআইডি হেল্পলাইন (১০৫)
এনআইডি সম্পর্কিত যেকোনো তথ্যের জন্য নির্বাচন কমিশনের হেল্পলাইন ১০৫ এ কল করতে পারেন।
আপনার মতামত ও জিজ্ঞাসা
এনআইডি কার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত আপনার কোনো প্রশ্ন, অভিজ্ঞতা বা মতামত থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। এই ধরনের আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নির্দেশিকা পেতে আমাদের নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।